কপিরাইট’ কী?
কপিরাইট আইন, ২০০০ অনুসারে ‘কপিরাইট’ বলতে বোঝাবে পুস্তক, সঙ্গীত, চলচ্চিত্র, চিত্রকলা, ডিজাইন, কম্পিউটার সফটওয়্যার ইত্যাদি প্রকাশ, অনুবাদ, অভিযোজন, ভাড়া দেয়া এবং বিক্রয় করবার অধিকারকে। কপিরাইটের মেয়াদ স্বত্বাধিকারীর মৃত্যুর পর ৬০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হবে। এই আইনের আওতায় কপিরাইটের মালিক তার মেধাস্বত্ব কপিরাইট সমিতিতে নিবন্ধন করতে পারেন। কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে অন্যকে কপি করার অধিকারের লাইসেন্সও দিতে পারেন। এক্ষেত্রে কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী জীবিত না থাকলে এই আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত ‘কপিরাইট বোর্ড’ লাইসেন্স দেয়ার অধিকার রাখে। লাইসেন্স লাভের পর প্রকৃত মালিক তার কাজ বা ইনটেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অনুবাদ, অভিযোজন বা প্রকাশ করলে লাইসেন্স বাতিল বলে গণ্য হবে।
এই আইনের আওতায় ‘কপিরাইট লঙ্ঘন’ বলতে বোঝাবে লাইসেন্স ব্যতীত অন্যের মেধাস্বত্ব পুনরুৎপাদন, অভিযোজন, প্রকাশ, বিক্রয়, ভাড়া, আমদানি বা এমন কিছু করা যার অধিকার কেবল প্রোপার্টির প্রকৃত স্বত্বাধিকারীর রয়েছে। কপিরাইট লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে দেওয়ানি এবং ফৌজদারি দু’ধরনের প্রতিকার পাওয়া যাবে। দেওয়ানি প্রতিকার হিসেবে নিষেধাজ্ঞা এবং ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান থাকছে। আর শাস্তি হিসেবে থাকছে জরিমানা এবং বিভিন্ন মেয়াদের কারাদ-।
চলচ্চিত্র ছাড়া অন্য মাধ্যমের কপিরাইট লঙ্ঘনের শাস্তি অনূর্ধ্ব ৪ বছরের কারাদ- এবং অনূর্ধ্ব ২ লাখ টাকা জরিমানা। অন্যদিকে চলচ্চিত্রের কপিরাইট ভঙ্গের শাস্তি অনূর্ধ্ব ৫ বছরের কারাদ- এবং অনূর্ধ্ব ৫ লাখ টাকা জরিমানা। তবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে কপিরাইটের লঙ্ঘন না হলে আদালত এই শাস্তির পরিমাণ কমাতে পারেন।
উল্লেখ্য, বেশ কিছু কাজকে কপিরাইট লঙ্ঘনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। যেমন মেধাস্বত্ব বিষয়ে গবেষণা, ব্যক্তিগত ব্যবহার, সমালোচনা, পর্যালোচনা, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন কিংবা সাময়িকীতে প্রকাশ, যুক্তিসঙ্গত উদ্ধৃতিসহ জনসমক্ষে আবৃত্তি, বিনামূল্যের গ্রন্থাগারে পাওয়া যায় না এমন বিদেশি পুস্তকের অনধিক তিন কপি অনুলিপি কপিরাইট লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে না। এছাড়া ভাষ্য সহকারে পুনর্মুদ্রণ হয়েছে এমন কোনো আইন এবং জনসাধারণের প্রবেশাধিকার আছে এমন স্থানে স্থায়ীভাবে অবস্থিত স্থাপত্য বা শিল্পকর্মের চিত্রাঙ্কন, রেখাচিত্র, খোদাই কিংবা আলোকচিত্র তৈরিও কপিরাইট লঙ্ঘন বলে গণ্য হবে না।