প্রশ্নঃ- আইনে ত্যাজ্যপুত্র/কন্যা বলতে কি বুঝ
উঃ- ত্যাজ্য পুত্র বা কন্যা বলতে কোন আইনগত বিধান নেই, তবে পিতা মাতা ইচ্ছা করলে তার সমস্ত সম্পত্তি সাফ কবলা রেজিঃ বা দান ইত্যাদি করে, অপর সন্তানকে বঞ্চিত করতে পারেন। লিখিত রেজিস্ট্রিকৃত না হলে ত্যাজ্যপুত্র বা ত্যাজ্য কন্যা বললেই বা ঘোষণা করলেই সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হবেনা বা সম্পর্র্ক ছিন্ন হবেনা।
প্রশ্ন:- দাদার আগে বাবা মারা গেলে নাতিরা দাদার সম্পত্তি পাবে
উঃ- বর্তমানে লা ওয়ারিশ প্রথা ওঠে গেছে। অর্থাৎ দাদার বর্তমানেপুত্র মারা গেলে নাতিরা সকলে দাদার সম্পত্তিতে সেই অংশ পাবে, যা তাদের পিতা পেত। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশের বিধান মতে এ নিয়ম চালু হয়। তবে এ বিধান অন্যদের ক্ষেত্রে (যেমন: ভাইয়ের আগে বোন মারা গেলে নিঃসন্তান ভাইয়ের সম্পত্তি মৃত বোনের ছেলে মেয়েরা পাবে না) প্রযোজ্য হবে না।
হবে।
প্রশ্নঃ- মামলার সাজা বিলম্বের কারণে তামাদি হয় কি
উঃ- সাজাপ্রাপ্ত আসামি ১২ বছর বা ততোধিক কাল পালিয়ে থাকলেও তার অপরাধ মার্জনা হবেনা, মৃত্যু পর্যন্ত সাজা বহাল থাকবে।
প্রশ্ন:- ফৌজাদারী মামলায় তামাদির সময় কত
উঃ- ফৌজদারী মামলা তামাদি হয় না, তবে বিলমবে মামলা করলে সন্দেহের সৃষ্টি হয় মাত্র।
প্রশ্নঃ নামজারি না হলে মালিকানা চলে যায় কি
উঃ- ভূমি রেকর্ড বা এটেস্টেশন না হলেও বৈধ অধিকার হারায় না, রেকর্ড বা এটেস্টেশন না হলেও বৈধ দাবী থাকলে তা অভিযোগক্রমে কাটা যাবে, অন্যের নামে রেকর্ড হলেই তার বৈধ দাবী সম্পত্তিতে জন্মে না। কাজেই রেকর্ড করার জন্য প্রচুর টাকা পয়সা খরচ করা বা ব্যস্ত হওয়া বা ঘাবড়িয়ে যাওয়ার কিছুই নেই।
প্রশ্ন:- কতদিন জবর দখল করলে ভূমিতে জবর দখলদার স্বত্ব জন্মে
উঃ- সম্পত্তির মালিক ১২ বছর বেদখল থাকলে নিজ সম্পত্তিতে বৈধ মালিকানা ও স্বত্ব হারায় এবং জবর দখলকারীর অকাট্য মালিকানা স্বত্ব জন্মে।
প্রশ্নঃ- কত টাকার দলিল রেজিঃ করতে হয় ?
উঃ- একশত টাকার ঊর্ধ্বে যে কোন লেনদেন রেজিঃ করতে হবে।
প্রশ্ন:- ফৌজদারী মামলায় কে বাদী হবেন
উঃ- ফৌজদারী মামলায় যে কেউ বাদী হতে পারেন। ভিকটিম নিজে বা তার আপন কোন লোক বাদী হতে হবে এমন কোন বিধান নেই। ঘটনা সম্পর্কে যিনি জানেন, দেখেছেন, শুনেছেন এমন যে কেউ বাদী হতে পারেন। পুলিশ কেইছ এ বাদী মানে সংবাদদাতা।
প্রশ্ন:- স্ত্রী তালাক দিলে মোহরানা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে কি
উঃ- কোন স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিলেই দেন মোহর পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে না। দেন মোহরের দায়ে দাম্পত্য জীবন, ঘর সংসার করতে হবে আজীবন, এটা শর্ত নহে, বিবাহ সম্ভোগ হলেই দেন মোহর ফরজ হয়ে যায়। সেটা দিতে হবে স্ত্রী ঘর সংসার না করলেও। স্ত্রী জওজিয়তে তুলে না নিলে বা বিবাহ সম্ভোগ না হলে অর্ধেক দেন মোহর দিতে হবে।
প্রশ্নঃ- কন্যা সন্তান কি মায়ের সম্পত্তি পুত্রের বেশি পায়
উঃ- মায়ের সম্পত্তি কন্যারা বেশি পায়না, পিতার অংশের ন্যায়ই কন্যারা পুত্রের অর্ধেক পায়। পিতা বা মাতার সম্পত্তিতে পুত্রের মতই কন্যারা ওয়ারিশ, সামান্য টাকা দিয়ে বা ছল চাতুরী করে কন্যাদেরকে বঞ্চিত করা যায় না।
প্রশ্নঃ- জোর করে কারো স্বীক্ষারোক্তি আদায় করা যায়
উঃ- না। ফৌজদারী অপরাধে জড়িত করে এমন কোন প্রশ্নের জবাব দিতে কাকেও বাধ্য করা যাবেনা বা সে বাধ্য নহে।
প্রশ্ন:- মামলা প্রমাণের জন্য কতজন সাক্ষী প্রয়োজন
উঃ- শুধুমাত্র একজন সাক্ষী দিয়ে (বিশ্বাসযোগ্য হলে) মামলা প্রমাণ করা যায়।
প্রশ্নঃ-কাউকে অপমান করা যায় কি
উঃ- সরকারী কর্মকর্তা কর্তৃক কাকেও গেট আউট, বাহির হও, দারোয়ান বের করে দাও,আটক কর ইত্যাদি বলা আইনগতভাবে অপরাধ।
প্রশ্ন:- রেজিস্ট্রিকৃত দান বৈধ কি
উঃ- মুসলিম আইনে মুসলমানদের অরেজিস্ট্রিকৃত মৌখিক দান বা অছিয়ত আইনতঃ কার্যকরী। তবে বর্তমানে রেজিস্ট্রেশন আইন অনুযায়ী মৌখিক দান বেআইনী।
প্রশ্নঃ- আমার মাত্র একজন কন্যা সন্তান। আমার নিজের কোন ভাইবোন নেই,আমার নামে কোন সম্পত্তি থাকলে আমার অবর্তমানে সেই সম্পত্তির মালিক কে হবে
উঃ- আপনার পুরো সম্পত্তির দুই আনা আপনার স্ত্রী পাবেন এবং একমাত্র কন্যা সন্তান হিসেবে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী আপনার অবর্তমানে আপনার বাকী সম্পত্তির অর্ধেক তার প্রাপ্য। বাকী অর্ধেক আপনার ভাইবোনদের মধ্যে নির্দিষ্ট অংশে বন্টন হবে।