M/s. বালুরপাড় হোল্ডিংস (ব্লগ)

জমি সংক্রান্ত আইন ও সমস্যর সমাধান এখানেই

বেনামে হস্তান্তর বা ক্রয়-বিক্রয়

বেনামে হস্তান্তর বা ক্রয়-বিক্রয়
সম্পত্তি ক্রয় বা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ‘বেনামি ট্রানজাকশন’ শব্দটি একটি বিশেষ আইনগত মর্যাদা ও অধিকার বহন করে। সাধারণত কোনো ব্যক্তি যখন নিজ অর্থে এবং নিজের স্বার্থে কোনো সম্পত্তি ক্রয়ের সময় অন্য ব্যক্তির নামে উক্ত সম্পত্তির দলিল করেন, তখন এ ধরনের হস্তান্তরকে বেনামি হস্তান্তর বলে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- ক, খ-এর কাছ থেকে নিজ অর্থে একটি সম্পত্তি ক্রয় করল। কিন্তু দলিল করার সময় ‘গ’-এর নামে দলিল করল। এক্ষেত্রে ‘গ’-কে ‘ক’-এর বেনামাদার ধরা হবে এবং এ ধরনের হস্তান্তরকে ‘বেনামি হস্তান্তর’ বলা হবে।
কোনো হস্তান্তর বেনামি কিনা সেটি নিরূপণের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ের ওপর দৃষ্টি দিতে হয়। যেমন- খরিদ-মূল্যের উৎস, সম্পত্তির দখল, পক্ষগণের মর্যাদা এবং সম্পর্ক, তর্কিত হস্তান্তর সম্পর্কে আনুষঙ্গিক অবস্থা, তর্কিত কবলার হেফাজতকারী কে এবং কার কাছ থেকে দাখিল হয়েছে এবং পক্ষগণের পূর্ব সম্পর্ক এবং বর্তমান সম্পর্ক।
১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ ও নীতিমালার ৫নং ধারা অনুসারে বাংলাদেশে এখন আর বেনামি লেনদেন বৈধ নয়। ওই অধ্যাদেশে ও নীতিমালার ৫নং ধারায় আরো বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তিই তার নিজ উপকারার্থে অন্য কোনো ব্যক্তির নামে কোনো স্থাবর সম্পত্তির ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে না।


আইন দিয়ে কেন বেনামি লেনদেন বন্ধ করতে হলো?
১৯৮৪ সালের আগে বেনামি লেনদেনের মধ্য দিয়ে মূলত নানাপ্রকারের দুর্নীতি চলত। বিপুল পরিমাণ কালো টাকা বানিয়ে পরে সেই অর্থ দিয়ে স্ত্রী কিংবা সন্তানদের নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করা হতো এবং এ উপায়ে সরকারের চোখ ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা চলত। এছাড়াও বেনামি ক্রয়-বিক্রয়ে যার নামে সম্পত্তি ক্রয় করা হতো, কখনো কখনো সেই ব্যক্তি সম্পত্তির মালিকানা দাবি করত এবং আদালতে এ সংক্রান্ত প্রচুর মামলা জমা হতো।
এসব কারণেই সরকার পরে সিদ্ধান্ত নেয় যে, সম্পত্তির দলিলে যার নাম থাকবে, তাকেই তার মালিক হিসেবে ধরা হবে। ইতোপূর্বে বেনামি ক্রয়-বিক্রয় স্বীকৃত থাকায় সম্পত্তির দলিলে অন্যজনের নাম দিয়ে নিজের মালিকানায় সম্পত্তি রাখার যে সুযোগ ছিল, ১৯৮৪ সালের আইন দ্বারা তা রহিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *