M/s. বালুরপাড় হোল্ডিংস (ব্লগ)

জমি সংক্রান্ত আইন ও সমস্যর সমাধান এখানেই

ইমারত নির্মাণ আইন ও বিধিমালা

ইমারত নির্মাণ আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘন করে যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করায় অনেক সময় প্রতিবেশীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ভবন নির্মাণের সময় নির্ধারিত জায়গা ছেড়ে না দেওয়া এবং ছাদ, কার্নিশ ও সানশেড বড় করে তৈরি করায় প্রায় মানুষের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিধিমালা লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করলে আইনে শাস্তির বিধানও রয়েছে। ইমারত নির্মাণ আইন ও বিধিমালা কী এ সম্পর্কে প্রত্যকেরই জানা উচিত। নিচে তা সংক্ষিপ্তভাবে তুলে দরা হলো।


ইমারত নির্মাণ বিধিমালা : ইমারত নির্মাণ আইন, ১৯৫২-তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার ১৯৯৬ সালে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা প্রণয়ন করে। এই বিধিমালায় ইমারত নির্মাণের অনুমোদন, অনুমোদন ফি, ইমারত নির্মাণের নকশা, রাস্তার দূরত্ব, ইমারত প্রণয়নকারীর যোগ্যতা, ইমারত নির্মাণের অনুমোদনের জন্য করা আবেদনের নিষ্পত্তি ইত্যাদির প্রক্রিয়া বলে দেওয়া হয়েছে। আবার কিভাবে নির্মাণ করতে হবে তারও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সম্পর্কে ৩ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, ইমারত নির্মাণ
যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইমারত ব্যবহার করা যাবে না।পার্শ্ববর্তী রাস্তা ও দূরত্ব : (ক) ইমারত বা বিল্ডিংসংলগ্ন রাস্তা বা এর সঙ্গে সংযোগকারী অন্যূন ৩.৬৫ মিটার প্রশস্ত রাস্তা থাকতে হবে। তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন রাস্তার ক্ষেত্রে কমপক্ষে তিন মিটার প্রশস্ত রাস্তা থাকতে হবে। (খ) কোনো পাশে লম্বাভাবে রাস্তা শেষ হলে এর প্রস্থ পার্শ্ব রাস্তাার প্রস্থ বলে গণ্য হবে। (গ) মালিকানা রাস্তা সর্বসাধারণের রাস্তা বলে গণ্য হবে। (ঘ) দুই রাস্তার সংযোগ স্থলের কোণে এক মিটার জায়গা রাস্তা সরলীকরণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। (ঙ) কোনো ইমারতের নিকটবর্তী কোনো রাস্তার কেন্দ্র থেকে কমপক্ষে সাড়ে চার মিটার অথবা রাস্তা সংলগ্ন সীমানা থেকে কমপক্ষে দেড় মিটার দূরে নির্মাণ করতে হবে। (চ) পার্শ্ববর্তী রাস্তার অভিমুখী দিককে ইমারতের সামনের দিক এবং এর বিপরীত দিককে পশ্চাৎ দিক হিসেবে গণ্য করা হবে।
সীয়াল : ইমারত পাশের সীমানা দেয়ালের উচ্চতা হতে হবে ১.৭৫ মিটার বা তার কম। ২.৭৫ মিটার উচ্চতাসম্পন্ন দেয়াল করা যাবে। তবে ওপরের এক মিটার গ্রিল বা জালি হতে হবে।আলো-বাতাস চলাচল : (ক) ইমারতের সব কক্ষে দরজা, জানালা, ফ্যান, লাইট ইত্যাদির মাধ্যমে স্বাভাবিক আলো-বাতাস চলাচলের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। (খ) রান্নাঘরের অবস্থান ইমারতের এক পাশে (বহির্দেয়ালে) হতে হবে।
ছাদ, কার্নিশ ও সানশেড নির্মাণ : (ক) ইমারতের ছাদ এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে যাতে করে ওই ছাদের পানি রাস্তায় বা অন্যের জমিতে কিংবা ইমারতের কাঠামোতে নিষ্কাশিত না হয়। (খ) ইমারতের ছাদ বা কার্নিশ উন্মুক্ত স্থানের ওপর এক মিটারের অর্ধেকের বেশি বর্ধিত করা যাবে না। (গ) ইমারতের দরজা ও জানালার ওপর আধা মিটার প্রস্থের বেশি সানশেড নির্মাণ করা যাবে না।
জরুরি নির্গমন পথ : ইমারতের মেঝের যে কোনো অবস্থান থেকে অনধিক ২৫ মিটারের মধ্যে জরুরি নির্গমন পথ থাকতে হবে। আবর্জনা অপসারণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা থাকতে হবে।
আইন লঙ্ঘনের সাজা : ইমারত নির্মাণ আইন, ১৯৫২-এর ১২ ধারায় এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ২০০৬-এ বলা হয়েছে, কেউ বিধিমালা লঙ্ঘন করে ইমারত নির্মাণ করলে সরকার সেই ইমারত ধ্বংস করতে পারে এবং দায়ী ব্যক্তিদের সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থ- অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *