2 January, 2016
হিন্দু আইনে উত্তরাধিকারী নির্বাচন দুইটি মতবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত। ‘দায়ভাগ’ ও ‘মিতাক্ষরা’ এই দুই মতবাদের মাধ্যমে হিন্দু আইনে সম্পত্তি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে হস্তান্তর হয়ে থাকে। দায়ভাগ পদ্ধতি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে প্রচলিত আছে। দায়ভাগ মতে পিন্ডদানের অধিকারী ব্যক্তি মাত্রই মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারী। যারা পিন্ড দিতে পারে তারাই মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য সম্পত্তির ওয়ারিশ বলা হয়। ভারতের অন্যান্য প্রদেশ এবং পাকিস্তানে মিতাক্ষরা পদ্ধতি প্রযোজ্য হয়ে থাকে ।
দায়ভাগ মতবাদের মাধ্যমে সম্পত্তি হস্তান্তরে হিন্দু নারীদের প্রতি চরম বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। যার ফলে একজন নারী তার পিতাও স্বামী উভয় সম্পত্তির অধিকার থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। এই মতবাদের ভিত্তিতে মূলত ৪৮ জন পুরুষ ও পাঁচ ধরনের নারীর উত্তরাধিকারের কথা বর্ণনা করা হয়েছে, যারা শাস্ত্র অনুযায়ী উত্তরাধিকার লাভ করে। এরা হচ্ছেন বিধবা কন্যা, মা, পিতামহী, প্রপিতামহী। দায়ভাগ অনুযায়ী এই পাঁচজন শাস্ত্র অনুযায়ী উত্তরাধিকার লাভ করলেও তাদের ক্রমপর্যায় এত দূরে যে এই ক্রমান্বয় পেরিয়ে সম্পত্তির মালিকানা পাওয়া সত্যি দুঃসাধ্য। এই মতবাদ অনুযায়ী পুত্র, পৌত্র বা প্রপৌত্রের মধ্যে কেহ জীবিত থাকলে পাঁচজন নারীর মধ্যে কেহই সম্পত্তির কোন অংশ বিশেষ পাবেন না। আর যদি এদের কেউ জীবিত না থাকেন সেক্ষেত্রে উক্ত নারীরা সম্পত্তিতে অধিকার পান শুধুমাত্র জীবদ্দশায় ভোগ করার জন্য। কতিপয় নির্দিষ্ট কারন ছাড়া তারা এই সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারেন না।