খোলা চুক্তি কী?
জমির যে বিক্রয়-চুক্তিতে কেবল জমির বিক্রেতা ও ক্রেতার পূর্ণ পরিচয়, জমির বিবরণ ও মূল্যের উল্লেখ থাকে তাকে ‘খোলা চুক্তি’ বলে।
১। ক্রেতার কাছে জমি বিক্রেতা তার জমির ঝঞ্ঝাটমুক্ত নিরঙ্কুশ মালিকানা-স্বত্ব নিশ্চিত করবেন; অবশ্য ক্রেতার জানা মতে জমির কোনো খুঁত থাকলে ক্রেতা তা মেনে নিতে বাধ্য।
২। অনিবন্ধিত জমির ক্ষেত্রে একটি যুক্তিসঙ্গত সময়সীমার মধ্যে জমি বিক্রেতাকে তার জমির কমপক্ষে পনের বছরের পুরনো মালিকানা-স্বত্বের প্রামাণিক দলিলের সংক্ষিপ্ত দলিল দেখাতে হবে।
৩। জমি-বিক্রেতাকে জমির স্বত্বধারী মালিক হিসেবে জমি বিক্রি করতে হবে।
৪। দলিলের সারসংক্ষেপ পাওয়ার পর যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে জমির ক্রেতাকে জমি কেনার ইচ্ছা ব্যক্ত করতে হবে।
৫। ক্রেতাকেই তার নিজ খরচে জমি হস্তান্তরের দলিল প্রস্তুত করতে হবে।
৬। দলিলপত্র চূড়ান্ত হলে জমির বিক্রেতাকে জমির দখল ছেড়ে দিতে হবে।
৭।যুক্তিসঙ্গত সময়সীমার মধ্যেই টাকা-পয়সার লেনদেন সম্পূর্ণ করতে হবে; যদি তা না করা যায় সে ক্ষেত্রে জমির মালিক ক্রেতার কাছ থেকে অপরিশোধিত ক্রয়মূল্যের ওপর সুদ পাবেন এবং ক্রেতা জমির দলিল সম্পূর্ণ হওয়ার সময় থেকে জমির আয় লাভ করতে থাকবেন। চিঠিপত্রের মাধ্যমে সম্পদিত চুক্তির ক্ষেত্রে সম্পত্তি আইন অনুযায়ী কিছু শর্ত রয়েছে। জমির মালিক স্বয়ং জমির দলিল প্রস্তুত করার জন্য পীড়াপীড়ি করতে পারবেন না। এ ছাড়া যেসব নিহিত ও বিধিবদ্ধ শর্ত রয়েছে, সেগুলো জমির মালিক ও ক্রেতা দুই পক্ষের সম্মতিতে পরিহার কিংবা পরিবর্তন অথবা সংরক্ষণ করা যায়। বাস্তবে সাধারণত যে-ধরনের চুক্তি হয়, তা-ই দুই পক্ষের অধিকার ও দায় আরো সুস্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করে দেয়। বাংলাদেশে ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৪ ধারা অনুসারে স্থাবর সম্পত্তি বিক্রির চুক্তি বলতে এই মর্মে একটি চুক্তি বোঝায় যে, পক্ষদের মধ্যে স্থিরীকৃত শর্তাবলিতে ওই সম্পত্তির বিক্রয় সম্পন্ন হবে। এর মাধ্যমে এককভাবে ওই সম্পত্তিতে কোনো স্বার্থ বা দায় সৃষ্টি হয় না। ওই আইনের ৫৫ ধারায় ক্রেতা ও বিক্রেতার অধিকার ও দায়দায়িত্ব বর্ণিত হয়েছে।