M/s. বালুরপাড় হোল্ডিংস (ব্লগ)

জমি সংক্রান্ত আইন ও সমস্যর সমাধান এখানেই

চেক ডিজঅনারের মামলায় বিশেষ সতর্কতা

চেক ডিজঅনারের মামলায় বিশেষ সতর্কতা

২০০৬ সালের সংশোধিত আইনে অভিযোগটির বিচার হবে দায়রা জজ আদালতে। সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চেক ডিজঅনারের মামলা দায়ের হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানির পর শপথপাঠে বাদিকে পরীক্ষা করে জবানবন্দি নিয়ে শুনানী অন্তে সরাসরি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমন/ ওয়ারেন্ট জারি করতে পারেন। তিনি মামলা ভিত্তিহীন হলে কিংবা পূর্বে বর্ণিত পদ্ধতিগত কোনো ত্রুটির কারণে প্রাথমিকভাবে খারিজ করতে পারেন। আদালত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অভিযোগ ছাড়া এই আইনের ১৩৮ ধারায় অপরাধের অভিযোগ আমলে নেবে না। দায়রা জজ আদালতের অধঃস্তন কোনো আদালত ১৩৮ ধারায় কিংবা এনআই অ্যাক্ট-এর কোনো অপরাধের বিচার করতে পারবেন না।
শাস্তি ও প্রতিকার: ১৩৮ ধারায় চেক ডিজঅনারের মামলায় অপরাধীর শাস্তি হলো সর্বোচ্চ এক বছর মেয়াদের কারাদ- অথবা চেকে বর্ণিত অর্থের তিনগুণ পরিমাণ পর্যন্ত অর্থদ- অথবা উভয়দন্ড প্রদান। চেকে উল্লিখিত টাকার যতটুকু জরিমানা হিসেবে আদায় হবে তা থেকে চেকে বর্ণিত পরিমাণ অর্থ চেকগ্রহীতাকে প্রদান করা হবে এবং বাকি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যোগ হবে। মনে রাখতে হবে, চেক ডিজঅনারের মামলা অন্যান্য ফৌজদারী মামলায় জরিমানার শাস্তি থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। বিজ্ঞ বিচারিক আদালত চেকের মামলায় জরিমানার টাকা আদায়ে জেলা কালেক্টর বা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারি কৌসুলি মারফত দেওয়ানি আদালতে জারি মামলা দায়ের করতে হয়। ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৮৬ ধারার বিধান মতেও জরিমানা দন্ড-প্রাপ্ত অপরাধীর অস্থাবর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়পূর্বক জরিমানা আদায়ের জন্য পরোয়ানা জারি কিংবা খেলাফকারীর স্থাবর বা অস্থাবর বা উভয় প্রকার সম্পত্তিতে দেওয়ানি পদ্ধতি অনুযায়ী পরোয়ানা কার্যকর করে জরিমানার টাকা আদায়ের কর্তৃত্ব দিয়ে জেলার কালেক্টরকে পরোয়ানা দিতে পারবেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪৭ ধারাও এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তবে মনে রাখতে হবে, দেওয়ানি আদালতে টাকা আদায়-এর মামলা সর্বশেষ লেনদেনের ৩ বছরের মধ্যে করতে হয়। কোনো কোম্পানির চেক ডিজঅনার হলে অপরাধ সংঘটনের সময় ওই কোম্পানির সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত কর্মকর্তা ওই অপরাধের শাস্তিভোগ করবেন। তবে ঘটনা সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই ছিল না এ ধরনের কোনো ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়া যায় না। কোম্পানি বা অ্যাসোশিয়েশন কর্তৃক প্রদত্ত চেক ডিজঅনার হলে হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইনের ১৪০ ধারা প্রযোজ্য হবে। ওই আইনের ধারাসমূহ জামিনযোগ্য ও দ্রুত বিচারযোগ্য। তবে এই আইনে জরিমানার অর্থ আদায়ে আইনি দুর্বলতার কারণে প্রকৃত প্রতারকরা পার পেয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া চেকের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করতে নির্দিষ্ট আদালতকে দায়িত্ব দিতে হবে যাতে ওই আদালতের ওপর অন্য কোনো মামলা-মোকদ্দমার দায়িত্ব না থাকে। এককথায় একটি স্বাধীন কোর্ট প্রসিডিউর থাকা বাঞ্ছনীয়।আপিল: তহবিল অপর্যাপ্ততার কারণে ব্যাংক চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার অপরাধে আদালতের দেয়া দন্ড-দাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে প্রথমে প্রত্যাখ্যাত চেকে বর্ণিত পরিমাণ টাকার ৫০ শতাংশ অর্থ সংশ্লিষ্ট আদালতে জমা দিয়ে তারপর আপিল করতে হয়।
সতর্কতাসমূহ
চেকের মেয়াদ চলে গেলে: চেক ডিজঅনারের মামলায় ঠিক সময়ে চেক ডিজঅনার না করা, ঠিক সময়ে নোটিশ প্রেরণ না করা ও ঠিক সময়ে আদালতে নালিশ দায়ের না করায় মামলাটি প্রাথমিকভাবে খারিজ হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া চেক প্রদানকারী ব্যক্তি মামলার ‘কজ অব অ্যাকশন’ নষ্ট করতে কিংবা চেকের মেয়াদ পার করিয়ে দিতে বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করতে পারে। এজন্যে এব্যাপারে পাওনাদারকে সতর্ক থাকতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত চেকের মেয়াদ চলে গেলেও কিন্তু দন্ড-বিধির ৪০৬/৪২০ ইত্যাদি ধারায় প্রতারণার মামলা করা যায়। ৪০৬ ধারাটি জামিন অযোগ্য হয়। দন্ড-বিধির ওই ধারা দুটি যে কোনো প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
বিস্তারিত: একটি গ্রহণযোগ্য ভালো আর্জি বাদির (চেকগ্রহীতার) মামলা প্রমাণে সমর্থ হয়। আর্জিতে লেনদেনের কারণ উল্লেখ না করলে দেনাদার চেকখানা মিসিং হয়েছে মর্মে মিথ্যা ডিফেন্স নিতে পারে। এজন্যে আর্জিতে স্বাক্ষীর নাম এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দালিলিক প্রমাণ থাকলে তাও দায়ের করতে হয়। তবে চেকের মামলায় অভিযুক্তের স্বাক্ষরিত চেকই প্রমাণের জন্য যথেষ্ঠ। চেক প্রদান করে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়াও আরেকটি প্রতারণা।
থানা নয় ম্যাজিস্ট্রেট: চেক প্রতারণায় তথা হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইনের অধীনে মামলা সরাসরি থানায় দায়ের করা যায় না। তা সরাসরি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করতে হয়।
চেক প্রদানকারীর জন্য: অনেকসময় দেখা যায়, টাকা আদায়ের পরও জামানত হিসেবে দেয়া চেক ব্যবহার করে হয়রানির শিকার করা হচ্ছে অনেক চেক প্রদানকারীকে। এক্ষেত্রে যতদূর সম্ভব টাকা দেয়ার সময় সাক্ষী রাখা জরুরী এবং জামানত হিসেবে প্রদত্ত চেক ফেরত নেয়া উচিত।
সর্বসাধারণের জন্য: কখনো কোনো চেক হারিয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কাছাকাছি থানায় জিডি দায়ের করে ব্যাংক-এর মাধ্যমে চেক স্টপ করিয়ে রাখুন। হারানো চেক উদ্ধারের জন্যও মামলা করা যায়।
আপনিকি ঢাকায় প্লট/ফ্ল্যাট/জমি ক্রয়ের কথা ভাবছেন? আপনার পছন্দের প্লট/ফ্ল্যাট/জমিটি আমাদের কাছেই আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *