প্রতারণা ও তার সাজা
কোনো জিনিস মিথ্যে বা তার অস্তিত্ব নেই জানা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তিকে ওই জিনিসের অস্তিত্ব সঠিক এ বিশ্বাস স্থাপনে কোনো কিছু করাকে সাধারণত প্রতারণা’ বলা যায়।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৫ ধারা অনুসারে বিক্রেতা তার বিক্রীত বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি ক্রেতার কাছে প্রকাশ না করলে এক্ষেত্রে বিক্রেতা প্রতারণা করেছেন বলে গণ্য হবেন।
তামাদি আইনের ১৮ ধারায় প্রতারণার ফলাফল সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘যে ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি একটি মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল করবার অধিকারী হয়, কিন্তু প্রতারণার মাধ্যমে তাকে সেই অধিকারের বিষয় অথবা যে স্বত্বের ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠিত, সে বিষয় জানতে দেয়া হয় নাই অথবা যে ক্ষেত্রে ওই অধিকার প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য যে দলিল প্রয়োজনীয়, তা প্রতারণা করে তার কাছ থেকে গোপন রাখা হয়েছে, সেই সকল ক্ষেত্রে_ ক. প্রতারণার বিরুদ্ধে দোষী ব্যক্তির বা তার সহযোগীর বিরুদ্ধে, অথবা খ. যে ব্যক্তি সরল বিশ্বাসে এবং মূল্যের বিনিময়ে ভিন্ন অন্য প্রকারে ওই দোষী ব্যক্তির মাধ্যমে স্বত্ব দাবি করে, তার বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সর্বপ্রথম যে দিন প্রতারণার কথা জানতে পারে, সেদিন থেকে অথবা দলিল গোপন করা হয়ে থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সর্বপ্রথম যেদিন দলিলটি উপস্থাপন করতে সমর্থ হয় বা অপরপক্ষকে তা উপস্থাপন করার জন্য বাধ্য করতে পারে, সেদিন থেকে মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিলের জন্য নির্ধারিত তামাদির মেয়াদ গণনা করতে হবে।
চুক্তি আইনের ১৭ ধারায় প্রতারণার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, প্রতারণা বলতে চুক্তির এক পক্ষ কর্তৃক বা তার এজেন্স কর্তৃক চুক্তির অন্য পক্ষতে বা তার এজেন্টকে প্রতারণার ইচ্ছায় অথবা চুক্তিতে অংশগ্রহণ করতে প্রবৃত্ত করার উদ্দেশে সম্পাদিত নিম্নবর্ণিত যেকোনো একটি কাজ-
১. কোনো ব্যক্তি কর্তৃক এমন কোনো তথ্য সম্পর্কে ধারণা দেয়া, যে তথ্যটি সত্য নয় এবং ওই ব্যক্তি নিজেও তার সত্যতায় বিশ্বাস করে না।
২. এমন ব্যক্তি কর্তৃক কোনো তথ্যের গোপনকরণ, যিনি তা জানেন বা বিশ্বাস করেন।
৩. পালনের ইচ্ছাবর্জিত কোনো কাজ।
৪. প্রতারণাযোগ্য অন্য কোনো কাজ।
৫. এমন কোনো কাজ বা কার্যবিরতি, যাকে আইনের বিশেষ ঘোষণার মাধ্যমে ‘প্রতারণামূলক’ হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়।
দ-বিধির ৪১৫ ধারায় প্রতারণার সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে এবং ৪১৭ থেকে ৪২৪ ধারায় বিভিন্নভাবে প্রতারণার শাস্তি সম্পর্কে বিধান বর্ণিত হয়েছে।
(ক) দন্ডবিধি ৪২৪ ধারা মোতাবেগ দুই বছর পর্যন্ত কারাদন্ড বা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবে।
(খ) দন্ডবিধি ৪১৭ ধারা মোতাবেগ এক বছর পর্যন্ত কারাদন্ড বা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবে।