মামলা করার বৈধ অপারগতা কী?
মুসলিম আইনে পাগল ব্যক্তিও উত্তরাধিকার সম্পত্তির মালিক হয়। এখন ধরুন এ ধরনের একজন পাগলের বাবার মৃত্যুর পর তার ভাইয়েরা তাকে উত্তরাধিকার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হলো। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ তার অধিকার লঙ্ঘনের পর একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে মামলা করবেন এটাই নিয়ম। যেই সময়ের মধ্যে মামলা করতে বলা হয়েছে, তার পরে মামলা করলে আদালত তা গ্রহণ করবেন না। কিন্তু পাগলের ক্ষেত্রেও কি নিয়মটি একই হবে?
তামাদি আইনের ৬ ধারায় বলা হয়েছে, যে ক্ষেত্রে মামলা বা কার্যধারা দায়ের করার অথবা ডিক্রিজারির জন্য দরখাস্ত দাখিলের অধিকারী ব্যক্তি, যে সময় থেকে তামাদির মেয়াদ গণনা করতে হবে, সে সময়ে যদি নাবালক, উন্মাদ বা জড়বুদ্ধসম্পন্ন হন, তবে ওই ব্যক্তি তার উপর্যুক্ত অপারগতার অবসান হওয়ার পর তামাদি আইনের প্রথম তফসিলের তৃতীয় স্তম্ভে অথবা ১৯০৮ সালের দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ৪৮ ধারায় বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে তিনি সেটি দায়ের করতে পারতেন, সে মেয়াদের মধ্যে মামলা বা কার্যধারা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবেন। যে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি, যে সময় থেকে তামাদির মেয়াদ গণনা করতে হবে, সে সময়ে উপরোলি্লখিত যে কোনো দুটি অপারগতার অবসান হওয়ার আগেই আরেকটি অপারগতার শিকার হন, সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি তার উভয় অপারগতার অবসান হওয়ার পর উপরোলি্লখিত যে মেয়াদের মধ্যে তিনি তা করতে পারতেন, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা অথবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবেন। যে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত তার অপারগতা চলতে থাকে, সে ক্ষেত্রে তার আইনানুগ প্রতিনিধি ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর, অপারগতা না থাকলে উপরোলি্লখিত যে মেয়াদের মধ্যে তা করা যেত, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবেন। যে ক্ষেত্রে উপর্যুক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার আইনানুগ প্রতিনিধি একই রকম অপারগতার শিকার হন, সে ক্ষেত্রে ১ ও ২ উপধারার বিধান প্রযোজ্য হবে। চুক্তি আইনের ১১ ধারা অনুসারে, নাবালক, উন্মাদ বা জড়বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি চুক্তি করতে পারবেন না। দেওয়ানি কার্যবিধির ৩২ আদেশে এবং মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি কর্তৃক বা তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিধান বর্ণিত হয়েছে।