সম্পত্তি লিজ দিবেন কীভাবে?
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৫ ধারায় ইজারা বা লিজের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, স্থাবর সম্পত্তি ভোগ দখলের অধিকার প্রকাশ্যভাবে কোনো নির্ধারিত মেয়াদে অথবা চিরস্থায়ীভাবে এবং প্রদত্ত বা প্রতিশ্রুত কোনো মূল্যের বিনিময়ে অথবা টাকা, ফসলের ভাগ, কার্য সম্পাদন বা অন্য কোনো মূল্যবান বস্তুর বিনিময়ে (যা নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বা নির্ধারিত সময়ে গ্রহীতা কর্তৃক হস্তান্তরকারীকে পরিশোধ করতে হবে এবং যা গ্রহীতা এরকম শর্তে গ্রহণ করেছে) হস্তান্তর করাকে ইজারা বলে।
উল্লিখিত ধারা অনুসারে যিনি সম্পত্তি হস্তান্তর করেন, তাকে বলা হয় ইজারাদাতা এবং যিনি হস্তান্তর গ্রহণ করেন তিনি ইজারাগ্রহীতা। যে মূল্য দিয়ে ইজারা গৃহীত হয়, তাকে বলে সালামি। যে অর্থ, কার্যসম্পাদন, অন্যান্য জিনিস প্রদানের ব্যবস্থা থাকে তাকে খাজনা বলে।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৫ ধারা থেকে ১১ ধারা পর্যন্ত লিজ বা ইজারা সংক্রান্ত বিধানাবলি বর্ণিত হয়েছে। সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৭ ধারায় ইজারা সম্পাদনের পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। নিম্নবর্ণিত তিন প্রকারের ইজারা রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়।
যথা:
(১) বার্ষিক ভিত্তিকে ইজারা,
(২) এক বছরের চেয়ে বেশি সময়ের জন্য ইজারা,
(৩) যে ইজারায় বার্ষিক খাজনা ধার্য হয়, সে ক্ষেত্রে ইজারাদাতা এবং গ্রহীতা উভয়েই সম্পন্ন করবেন।
যে ক্ষেত্রে ইজারার জন্য রেজিস্ট্রি দলিল আবশ্যক, সে ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রি দলিল না করলে ইজারা বাতিল বলে গণ্য হবে। তবে ইজারা গ্রহীতা যদি সম্পত্তির দখলে থাকেন এবং দাতা যদি খাজনা গ্রহণ করেন, তবে বিনা নোটিশে গ্রহীতাকে ইজারাকৃত সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করা যাবে না।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৮ ধারায় ইজারাদাতা ও গ্রহীতার দায়-দায়িত্ব সম্পর্কে বিধান বর্ণিত হয়েছে। ইজারা কিভাবে সমাপ্ত হয় সেটি সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১১১ ধারায় বলা হয়েছে। একই আইনের ১১৭ ধারা অনুসারে এই অধ্যায়ের বিধানগুলো কৃষিকাজের জন্য ইজারার ওপর প্রযোজ্য নয়।
১৯৫০ সালের জমিদারি দখল ও প্রজাস্বত্ব আইন কৃষিজমি ইজারা প্রদান নিষিদ্ধ করেছে। ওই আইনের ৭৫(ক) ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি তার দখলের জমি ইজারা দেবেন না, ইজারা দিলে ইজারাভুক্ত জমি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে এবং ইজারা বাতিল বলে গণ্য হবে।