আরবিট্রেটর নিয়োগ
২৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যুগ্ম জেলা জজ পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন একজন বিচার বিভাগীয় কর্মচারীকে, উক্ত প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্ট কোনো এলাকার জন্য, আরবিট্রেটর নিয়োগ করিবে।
আরবিট্রেটরের নিকট আবেদন
৩০। (১) কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এই আইনের অধীনে জেলা প্রশাসক কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদ গ্রহণ করিতে সম্মত না হইলে তাহা সংশোধনের জন্য রোয়েদাদের নোটিশ জারির ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) কার্যদিবসের মধ্যে আরবিট্রেটরের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদনে রোয়েদাদের বিরুদ্ধে আপত্তির কারণ উল্লেখ করিতে হইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীনে দাখিলকৃত আবেদনে জেলা প্রশাসকের সহিত প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থাকেও পক্ষভুক্ত করিতে হই
শুনানির নোটিশ
৩১। (১) আরবিট্রেটর, ধারা ৩০ এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর, শুনানির তারিখ
উল্লেখ করিয়া উক্ত তারিখে তাহার আদালতে উপস্থিত হইবার জন্য নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিবর্গের উপর নোটিশ জারি করিবেন, যথা:―
(ক) দরখাস্তকারী;
(খ) আপত্তিতে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ;
(গ) জেলা প্রশাসক; এবং
(ঘ) প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা।
(২) আরবিট্রেটর অনধিক ৯০ (নববই) কার্যদিবসের মধ্যে প্রাপ্ত আবেদনের উপর শুনানি গ্রহণ করিয়া তাহার আদেশ প্রদান করিবেন।
কার্যধারার পরিধি
৩২। আরবিট্রেটর কর্তৃক গৃহীতব্য কার্যধারায় অনুসন্ধানের পরিধি কেবল দাখিলকৃত আবেদনে উল্লিখিত আপত্তির বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকিবে।
ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে আরবিট্রেটরের কর্মপদ্ধতি
৩৩। আরবিট্রেটর, অধিগ্রহণকৃত অথবা হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে, ধারা ৯, ১০ ও ২২ এর বিধান অনুসরণ করিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, জেলা প্রশাসকের রোয়েদাদে উল্লিখিত অংকের শতকরা ১০ (দশ) ভাগের অধিক ক্ষতিপূরণ কোনো মালিকের জন্য নির্ধারণ করা যাইবে না।
আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদ
৩৪। (১) এই অধ্যায়ের অধীন আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত প্রত্যেক রোয়েদাদ লিখিত ও স্বাক্ষরিত হইতে হইবে এবং, ক্ষেত্রমত ধারা ৯ এর উপ-ধারা (১) বা ধারা ২২ এর উপ-ধারা (৫) এর বিধানাবলির আলোকে নির্দিষ্টকৃত রোয়েদাদের পরিমাণ, কারণসহ, জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।
(২) আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ জেলা প্রশাসক কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ অপেক্ষা অধিক হইলে, আরবিট্রেশন আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে, যতদিন পর্যন্ত উক্ত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান বা প্রদানের প্রস্তাব করা না হইবে, ততদিন পর্যন্ত প্রত্যেক বৎসর শতকরা ১০ (দশ) ভাগ অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।
(৩) এই ধারায় উল্লিখিত প্রত্যেক রোয়েদাদ এবং রোয়েদাদের কারণ সংবলিত বর্ণনা দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ২ এর দফা (২) ও (৯) এর মর্মানুযায়ী, যথক্রমে, ডিক্রি ও রায় হিসাবে গণ্য হইবে।
মামলার ব্যয়
৩৫। এই আইনের অধীন অনুষ্ঠিত কার্যধারায় খরচের পরিমাণ কোন পক্ষ কী পরিমাণে বহন করিবে তাহা রোয়েদাদে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে।
আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদের বিরুদ্ধে আপিল
৩৬। (১) আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণের রোয়েদাদের বিরুদ্ধে উপ-ধারা (২) অনুযায়ী গঠিত আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাইবে।
(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো নির্দিষ্ট এলাকার জন্য এক বা একাধিক আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল গঠন করিতে পারিবে।
(৩) একজন সদস্যকে লইয়া একটি আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল গঠিত হইবে যিনি, জেলা জজ হিসাবে কর্মরত ছিলেন বা আছেন এইরূপ ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে, সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন।
(৪) আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৫) আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণের রোয়েদাদ আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদ অপেক্ষা অধিক হইলে রায় প্রদানের তারিখ হইতে উক্ত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান অথবা প্রদানের প্রস্তাব করা পর্যন্ত বার্ষিক শতকরা ১০ (দশ) ভাগ অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রত্যেক ভূমির মালিকের জন্য নির্ধারিত ক্ষতিপূরণের রোয়েদাদ আরবিট্রেটর কর্তৃক ধার্যকৃত রোয়েদাদ অপেক্ষা শতকরা ১০ (দশ) ভাগের অধিক হইবে না।
(৬) আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক অনধিক ৬০ (ষাট) কার্যদিবসের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করিয়া উহা লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে অবহিত করিতে হইবে।
অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান
৩৭। (১) আরবিট্রেটর বা, ক্ষেত্রমত, আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত রোয়েদাদের প্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের প্রয়োজন হইলে, জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট রোয়েদাদের ১(এক) মাসের মধ্যে প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থাকে উক্ত অতিরিক্ত অর্থ জমা প্রদানের জন্য নোটিশ প্রদান করিবেন, এবং প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা উক্ত নোটিশ প্রাপ্তির অথবা রোয়েদাদের ১(এক) মাসের মধ্যে, যাহা অপেক্ষাকৃত কম, উক্ত অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করিবেন।
(২) আরবিট্রেটর বা, ক্ষেত্রমত, আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনালের রোয়েদাদের ফলে প্রদেয় অতিরিক্ত অর্থ প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক জমা প্রদানের অব্যবহিত পরে জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট দাবিদারকে উক্ত অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করিবেন।
(৩) আরবিট্রেটর বা, ক্ষেত্রমত, আরবিট্রেশন আপিলেট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত রোয়েদাদ অনুসারে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধের জন্য প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা দায়ী থাকিবে।
২০০১ সনের ১ নং আইনের অপ্রযোজ্যতা
৩৮। সালিস আইন, ২০০১ (২০০১ সনের ১নং আইন) এর কোনো কিছুই এই আইনের অধীন আরবিট্রেশনের ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য হইবে না।
চলবে—