M/s. বালুরপাড় হোল্ডিংস (ব্লগ)

জমি সংক্রান্ত আইন ও সমস্যর সমাধান এখানেই

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ হুকুমদখল আইন ২০১৭ (পর্ব -পাচ)

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ হুকুমদখল আইন ২০১৭ (পর্ব -পাচ)

20 November, 2018

জেলা প্রশাসক কর্তৃক রোয়েদাদ প্রস্তুত
৮। (১) জেলা প্রশাসক, ধারা ৭ এর অধীন নোটিশে শুনানির জন্য কার্য তারিখে অথবা অন্য কোনো মুলতবি তারিখে, ধারা ৪ এর অধীন নোটিশ জারির সময় স্থাবর সম্পত্তির মূল্য এবং ক্ষতিপূরণের জন্য দাবিদারগণের পরস্পরের দাবি এবং দাবিকৃত অংশের বিষয়ে অনুসন্ধান করিবেন এবং নিম্নবর্ণিত বিষয়ে একটি রোয়েদাদ প্রস্তুত করিবেন, যথা :-

(ক) স্থাবর সম্পত্তির জন্য যে পরিমাণ ক্ষতিপূরণ তাহার বিবেচনায় প্রদান করা হইবে; এবং

(খ) অধিগ্রহণ প্রস্তাবাধীন মৌজার সর্বশেষ জরিপের রেকর্ড ও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত সম্পত্তিতে সকল জ্ঞাত এবং আইনানুগ দাবিদারগণের ক্ষতিপূরণের অংশ।

(২) জেলা প্রশাসক কর্তৃক উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রস্তুতকৃত রোয়েদাদ, এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধির বিধানাবলি সাপেক্ষে, চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩) ক্ষতিপূরণের মঞ্জুরি (award) প্রস্তুতির তারিখ হইতে ৭(সাত) কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসক –

(ক) স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মঞ্জুরির নোটিশ প্রদান করিবেন; এবং

(খ) প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ মঞ্জুরির প্রাক্কলন প্রেরণ করিবেন।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রাক্কলন প্রাপ্তির ১২০ (একশত বিশ) কার্যদিবসের মধ্যে প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ মঞ্জুরির অর্থ, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, জেলা প্রশাসকের নিকট জমা প্রদান করিতে হইবে।

(৫) ধারা ৭ এর অধীন নোটিশ জারির পর ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবস অথবা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে প্রাক্কলন প্রস্তুতির কার্যক্রম সম্পন্ন করিতে হইবে।
ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়াবলি
৯। (১) এই আইনের অধীনে অধিগ্রহণযোগ্য কোনো স্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করিবার সময় জেলা প্রশাসক নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিবেন, যথা :-

(ক) ধারা ৪ এর অধীন নোটিশ জারির সময় সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির বাজার মূল্য :

তবে শর্ত থাকে যে, বাজার মূল্য নির্ধারণের সময় উক্ত স্থাবর সম্পত্তির পারিপার্শ্বিক এলাকার (vicinity) সমশ্রেণির এবং সমান সুবিধাযুক্ত স্থাবর সম্পত্তির ধারা ৪ এর অধীন নোটিশ জারির পূর্বের ১২ (বার) মাসের গড় মূল্য নির্ধারিত নিয়মে হিসাব করিতে হইবে;

(খ) যৌথ তালিকা প্রস্তুতের সময় স্থাবর সম্পত্তির উপর দণ্ডায়মান যে কোনো ফসল বা বৃক্ষের জন্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ক্ষতি;

(গ) অধিগ্রহণের কারণে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিদ্যমান অপর স্থাবর সম্পত্তি হইতে প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তি বিভাজনের ফলে সৃষ্ট ক্ষতি;

(ঘ) অধিগ্রহণের কারণে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অন্যান্য স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বা উপার্জনের উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাবের ফলে সৃষ্ট ক্ষতি; এবং

(ঙ) অধিগ্রহণের কারণে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাহার আবাসস্থল বা ব্যবসা কেন্দ্র স্থানান্তর করিতে বাধ্য করা হইলে উক্তরূপ স্থানান্তরের জন্য যুক্তিসংগত খরচাদি।

(২) সরকারি কোনো প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) তে বর্ণিত বাজারদরের উপর অতিরিক্ত শতকরা ২০০ (দুইশত) ভাগ ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে উক্ত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে বাজারদরের উপর অতিরিক্ত শতকরা ৩০০(তিনশত) ভাগ।

(৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ), (গ), (ঘ) এবং (ঙ) তে বর্ণিত ক্ষতির ক্ষেত্রে বাজারমূল্যের উপর অতিরিক্ত শতকরা ১০০ (একশত) ভাগ ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।

(৪) এই ধারায় উল্লিখিত ক্ষতিপূরণ প্রদান ব্যতীত, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অধিগ্রহণের কারণে বাস্তচ্যুত পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।
ক্ষতিপূরণ প্রদান
২৩। (১) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত কোন কারণ উদ্ভব না হইলে, জেলা প্রশাসক ধারা ২২ এর অধীন ক্ষতিপূরণের জন্য ধার্যকৃত রোয়েদাদ অনুযায়ী প্রাপ্য অর্থ উহার দাবিদারকে প্রদান করিবেন।

(২) ক্ষতিপূরণের দাবিদার ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করিতে অসম্মত হইলে অথবা ক্ষতিপূরণের কোনো দাবিদার না থাকিলে অথবা ক্ষতিপূরণ দাবিদারের মালিকানা বিষয়ে কোনো আপত্তি থাকিলে অথবা ক্ষতিপূরণের অংশ নির্ধারণে কোনো আপত্তি থাকিলে, জেলা প্রশাসক ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে জমা রাখিবেন যাহা, কোনো পক্ষের আরবিট্রেটর কর্তৃক নির্ধারিত দাবিকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখলের ক্ষেত্রে পরিশোধিত বলিয়া গণ্য হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসাবে গৃহীত হইলে তিনি, ক্ষতিপূরণের পরিমাণের বিষয়ে আপত্তিসহ, উক্ত অর্থ গ্রহণ করিতে পারিবেন:

আরও শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি আপত্তি ব্যতিরেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ গ্রহণ করিলে তিনি ধারা ৩০ এর অধীন দরখাস্ত করিবার জন্য যোগ্য হইবেন না।

(৩) এই অধ্যায়ের অধীন ঘোষিত রোয়েদাদ অনুযায়ী সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিপূরণ গ্রহণকারী ব্যক্তি উক্ত সম্পত্তির আইনানুগভাবে বৈধ দাবিদারকে ক্ষতিপূরণের সংশ্লিষ্ট অর্থ ফেরত প্রদানে বাধ্য থাকিবেন এবং জেলা প্রাশাসক তাহার নিকট হইতে উক্ত অর্থ আদায় করিয়া বৈধ দাবিদারকে প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন।
হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির নিকট হইতে অর্থ আদায় ২৪। জেলা প্রশাসক, কোনো ব্যক্তির অনুকূলে হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির বরাদ্দ প্রদান ও দখল হস্তান্তর করিবার পর, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তাহার নিকট হইতে ধার্যকৃত অর্থ আদায় করিবেন।
হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ
২৫। (১) জেলা প্রশাসক, হুকুমদখলকালীন সময়ে, হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়ী থাকিবেন।

(২) বিনষ্ট হইতে রক্ষার জন্য হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি সংস্কারের প্রয়োজন মর্মে সন্তুষ্ট হইলে জেলা প্রশাসক, স্বয়ং মালিককে তাহার স্থাবর সম্পত্তি সংস্কারের জন্য সুযোগ প্রদান করিবার পর, ক্ষতিপূরণের অর্থের অনূর্ধ্ব এক ষষ্ঠাংশ অর্থ ব্যয়ে উহার সংস্কার করিবেন এবং ব্যয়িত অর্থ ক্ষতিপূরণের অর্থের সহিত সমন্বয় করিবেন।
হুকুমদখল অবমুক্তকরণ
২৬। (১) কোনো হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখল মুক্ত করা হইলে জেলা প্রশাসক, যাহার নিকট হইতে উক্ত সম্পত্তি হুকুমদখল করা হইয়াছিল তাহাকে বা তাহার উত্তরাধিকারীকে অথবা উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তরের জন্য তদ্বিবেচনায় যোগ্য কোনো ব্যক্তির নিকট ফেরত প্রদান করিবেন।

(২) হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন দখল হস্তান্তর করা হইলে জেলা প্রশাসক উক্ত সম্পত্তি হইতে সম্পূর্ণরূপে দায়মুক্ত হইবেন, তবে উক্তরূপ দখল হস্তান্তরের কারণে, উক্ত সম্পত্তিতে কোনো ব্যক্তির কোনো আইনগত অধিকার থাকিলে, অথবা যাহার অনুকূলে স্থাবর সম্পত্তির দখল হস্তান্তর করা হইয়াছে তাহার নিকট কোনো বৈধ দাবি থাকিলে, উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাহার উক্ত দাবি প্রতিষ্ঠার অধিকার ক্ষুণ্ণ হইবে না।

(৩) হুকুমদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি কোনো ব্যক্তির অনুকূলে ফেরত প্রদানের জন্য অবমুক্ত করিবার পর, উক্ত সম্পত্তির দখল গ্রহণ করিবার জন্য জেলা প্রশাসক কর্তৃক লিখিতভাবে অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে উক্ত সম্পত্তি দখল গ্রহণ না করিলে অথবা দখল গ্রহণ করিতে অস্বীকার করিলে, জেলা প্রশাসকের লিখিত আদেশে বর্ণিত সময় ও তারিখের পর সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি উক্ত ব্যক্তির অনুকূলে হস্তান্তরিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(৪) যাহার অনুকূলে হুকুমদখলমুক্ত স্থাবর সম্পত্তির দখল হস্তান্তরিত হইবে তাহাকে পাওয়া না গেলে অথবা তাহার কোনো প্রতিনিধি বা তাহার পক্ষে দখল গ্রহণ করিবার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি উপস্থিত না থাকিলে, জেলা প্রশাসক উক্ত সম্পত্তির প্রকাশ্য কোনো স্থানে ‘‘স্থাবর সম্পত্তিটি হুকুমদখল মুক্ত হইয়াছে’’ মর্মে বিজ্ঞপ্তি লটকাইবেন এবং, উক্ত বিজ্ঞপ্তির ৯০ (নববই) কার্যদিবসের মধ্যে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তদ্মর্মে একটি নোটিশ প্রদান করিবেন।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন সরকারি গেজেটে কোনো নোটিশ প্রকাশিত হইলে, উক্ত নোটিশ প্রকাশের তারিখ ও সময় হইতে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি হুকুমদখলের আওতামুক্ত হইবে এবং আইনত দখল পাইবার যোগ্য ব্যক্তিকে দখল হস্তান্তর করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত তারিখের পর হইতে উক্ত সম্পত্তির বিপরীতে কোনো ক্ষতিপূরণ বা অন্য কোনো দাবির বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কোনো দায় থাকিবে না।
রাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে উচ্ছেদ
২৭। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যে উদ্দেশ্যে কোন স্থাবর সম্পত্তি হুকুমদখল করা হইবে, উক্ত উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে উক্ত সম্পত্তি ব্যবহৃত হইলে অথবা বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্ত সম্পত্তি বাবদ প্রদেয় অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হইলে অথবা ধারা ২৬ অনুযায়ী অবমুক্তির কারণ উদ্ভব হইলে, জেলা প্রশাসক, যে কোনো সময় লিখিত আদেশ দ্বারা, উক্ত আদেশে উল্লিখিত তারিখ ও সময়ের মধ্যে উক্ত সম্পত্তির দখল পরিত্যাগের জন্য উক্ত বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা দখলদারকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত জেলা প্রশাসকের আদেশ নির্ধারিত সময়ে প্রতিপালন করা না হইলে অথবা অমান্য করা হইলে, তিনি সংশ্লিষ্ট বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা দখলদারকে উচ্ছেদ করিতে পারিবেন এবং এতদুদ্দেশ্যে প্রয়োজন অনুসারে বল (force) প্রয়োগ করিতে পারিবেন।
ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় প্রযোজ্য নয়
৮। এই অধ্যায়ের কোনো কিছুই ক্যান্টনমেন্ট এলাকার সীমানার মধ্যে অবস্থিত কোনো স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।

চলবে—-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *