জমি ক্রয়ের পর একজন ভূমি মালিকের কর্তব্য হলো :
১। জমি রেজিষ্ট্রি করার পর খরিদা জমি দখল, সীমানা নির্ধারণ এবং জমি ব্যবহার তথা চাষাবাদ বা বাড়িঘর নির্মাণ করা।
২। রেজিষ্ট্রি অফিস হতে মূল দলিল গ্রহণ করা।
৩। মূল দলিল প্রাপ্তিতে বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দলিলের সার্টিফাইড কপি নেওয়ার ব্যবস্থা করা।
৪। মিউটেশন/ নামজারি করার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অফিসে দলিলের সত্যায়িত কপিসহ নির্ধারিত ফিস দিয়ে নির্ধারিত ফর্মে আবেদন করে মিউটেশন/ নামজারি করানোর ব্যবস্থা করা।
৫। মিউটেশন/ নামজারি মঞ্জুর হলে আদেশপত্রের সার্টিফাইড কপি এবং নতুন খতিয়ানের সার্টিফাইড পর্চা গ্রহণ করার ব্যবস্থা করা।
৬। মিউটেশন মোতাবেক জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর নিয়মিত পরিশোধ করার ব্যবস্থা করা।
৭। জমি ক্রয়ের পর উহা বিক্রেতার দখলে রাখা অত্যন্ত বিপদজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ অসাধু মালিক কর্তৃক তার দখল দেখিয়ে অন্য ক্রেতার নিকট পুনরায় বিক্রি করার সুযোগ থাকে।
৮। মিউটেশন তথা নামজারি না করলে মালিক কর্তৃক পুনরায় জমি বিক্রি করার সুযোগ থাকে।
৯। মালিকানা প্রমাণের জন্য সাধারণত চারটি বিষয়ে উপর জোর দেওয়া যেতে পারে। যথা–
(ক) দলিল সঠিক আছে কিনা।
(খ) জমি দখলে আছে কিনা।
গ) দাখিলা অর্থাৎ খাজনা দেয় কিনা (খাজনা দেওয়ার পূর্ব শর্ত হল মিউটেশন বা নামজারী করা।
(ঘ) খতিয়ান ও পর্চার মধ্যে মিল আছে কিনা।
১০। নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করলে জমি নিলাম হয়ে যেতে পারে।
১১। ভালভাবে সীমানা চিহ্নিত করে না রাখলে অন্যেরা অনধিকার প্রবেশ করার সুযোগ পাবে।
১১। ভূমি মালিকের দায়িত্ব ভূমির খাজনা/ কর নিয়মিত পরিশোধ করা, জমি ব্যবহার তথা চাষাবাদ বা অন্য কার্যক্রমে ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা।
বিভিন্ন কারণে ভূমি বিরোধ সৃষ্টি হয়, প্রধান কারণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য
(ক) যৌথ পরিবারের মধ্যে ভাগবণ্টন সংক্রান্তে বিরোধ।
(খ) ক্রয়কৃত জমির প্রকৃত মালিকানা সংক্রান্তে জটিলতা ।
(গ) ক্রয়কৃত জমির দলিল সঠিকভাবে রেজিষ্ট্রি না করা।
(ঘ) ভূমি অফিসের রেকর্ড সংগ্রহে জটিলতা/ক্রুটি (ঙ) পৈত্রিক সম্পত্তি বন্টনে স্বচ্ছতার অভাব।
(চ) যৌথ পরিবারে বিশেষভাবে মেয়ে সন্তানদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির যথাযথবণ্টন না করা ইত্যাদি।
জমি–জমা সংক্রান্ত বিরোধ সমূহ দেওয়ানী আদালতে নিস্পত্তি যোগ্য।