M/s. বালুরপাড় হোল্ডিংস (ব্লগ)

জমি সংক্রান্ত আইন ও সমস্যর সমাধান এখানেই

দলিল বাতিল করতে হয় কীভাবে

দলিল বাতিল করতে হয় কীভাবে

মনে করুন, আপনার একটি দলিল বা আইনি ডকুমেন্ট ছিল, যা অন্যের হস্তগত হয়েছে, কিংবা সেটির এমন পর্যায়েরয়েছে, যার কার্যকরিতা বহাল থাকলে আপনার জন্য সমস্যার তৈরি হতে পারে। দলিল বাতিল করার এরকম কোনো প্রয়োজন পড়লে, আদালতের শরণাপন্ন হয়ে কাজটি করা যায়।


আমাদের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ নং ধারা হতে ৪১ নং ধারা পর্যন্ত আদালত কর্তৃক দলিলাদি বাতিলিকরণ সম্পর্কে বিধান বর্ণিত হয়েছে। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে লিখিত চুক্তি অবৈধ বা বাতিলযোগ্য, যার যুক্তিসঙ্গত আশঙ্কা রয়েছে যে, তেমন দলিল যদি অনিষ্পন্ন অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে সেটি তার গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে, সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি তা বাতিল বা বাতিলযোগ্য ঘোষণার জন্য মামলা দায়ের করতে পারেন এবং আদালত তার ইচ্ছাধীন ক্ষমতাবলে তেমন রায় প্রদান করতে এবং এবং ‘চুক্তি বিলুপ্ত’ হিসেবে ত্যাগ করবার নির্দেশ প্রদান করতে পারেন।

দলিলটি যদি রেজিস্ট্রেশন আইন অনুসারে রেজিস্ট্রিকৃত হয়ে থাকে, তাহলে আদালত ডিক্রির একটি কপি সেই সংশ্লিষ্ট অফিসারের কাছে প্রেরণ করবেন, যার অফিসে উক্ত দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে এবং সেই অফিসার সেই বইয়ে দলিলের নকলে সেটির বিলুপ্তির বিষয় লিপিবদ্ধ করবেন। তামাদি আইন, ১৯০৮-এর ৯১ ধারা অনুসারে যে দলিল বাতিলের জন্য প্রার্থনা করা হয়, সে দলিল সম্পর্কে জানবার বা অবগত হবার তিন বছরের মধ্যে মামলা দাখিল করতে হবে, নয়তো এধরনের মামলা তামাদি হয়ে যাবে এবং এর কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না। অবশ্য এধরনের মামলা তামাদি হয়ে গেলে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ নং ধারা অনুসারে ‘ডিক্লেরেশন মামলা’ দায়ের করে ভিন্নভাবে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ আছে।
নালিশী দলিলে যিনি পক্ষে থেকে উক্ত দলিলে রদ বা বাতিলের জন্য মামলা করেন, সেক্ষেত্রে কোর্ট ফি অ্যাক্টের বিধান মতে ‘এডভোলেরম কোর্ট ফি’ প্রদান করে মামলা দায়ের করতে হবে। বাদী যদি নালিশী কবলায় কোন পক্ষ না থাকেন এবং উক্ত দলিল তার উপর বাধ্যকর নয় মর্মে বিজ্ঞাপনী ডিক্রির প্রার্থনা করেন, সেক্ষেত্রে নির্ধারিত কোর্ট ফি প্রদানে মামলা করা যাবে।
৩৯ ডিএলআর-এর ‘সুফিয়া খানম চৌধুরী বনাম ফাইজুন্নেছা চৌধুরী মামলা’র সিদ্ধান্ত অনুসারে, কোনো দলিল রদের প্রার্থনা ছাড়াই শুধুমাত্র উক্ত দলিল বাতিল মর্মে ঘোষণার মামলা চলতে পারে। তবে যদি দেখা যায় যে, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ নং দারা অনুসারে উক্ত দলিল রদের ঘোষণা দরকার কিন্তু এ ধরণের কোন প্রার্থনা করা হয়নি, সে ক্ষেত্রে বাদীকে অতিরিক্ত কোর্ট ফি প্রদান করতে বলা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *