উত্তরাধিকার সম্পদ বণ্টন
মিরাস বা উত্তরাধিকারের অর্থ হলো, একের অনুপস্থিতিতে অন্যের অধিকার। সে হিসেবে কারও মৃত্যুর পর অন্যের যে অধিকার জন্মায় তাকে উত্তরাধিকার বলে। একজনের জীবদ্দশায় কারও সম্পদে কখনও অন্যজনের অধিকার জন্মায় না। ইসলাম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে উত্তরাধিকার সম্পদের সুষম বণ্টন। কাউকে কোনো ভাবে তার প্রাপ্ত মিরাস থেকে বঞ্চিত করা কবিরা গোনাহ। ন্যায্যভাবে উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন ফরজ কাজ। তবে এ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে আবার কেউ জেনে-বুঝে সম্পদের মোহে উত্তরাধিকার সম্পদ ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন করে না। এমন মনোভাব স্পষ্ট গোনাহের কাজ। তওবা ছাড়া যার ক্ষমা নেই। অবশ্য কিছু সচেতন লোক রয়েছেন, যারা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন করে থাকেন। আমাদের সমাজে উত্তরাধিকার সম্পদ থেকে বেশি বঞ্চিত হয় নারীরা। নারীদের উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য নানা অজুহাত ও উপায় দাঁড় করানো হয়। বিশেষত বিয়ের সময় প্রদেয় আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী প্রদানের কারণে কিংবা ভাইয়েরা বোনদের বিভিন্ন উপলক্ষে নানা উপহার প্রদানের অজুহাতে নারীদের মিরাস দেওয়া হয় না। এরপরও বোনরা মিরাস দাবি করলে কিংবা মিরাসের হিস্যা নিয়ে গেলে তাদের জন্য বাপের বাড়ির দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হয়; ভাইবোনের মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। ইসলামের দৃষ্টিতে এ ধরনের আচরণ চরম অন্যায়, অমানবিক ও কঠিন গোনাহের কাজ। মনে রাখতে হবে, বিয়েতে বা বিয়ের পরে বোন বা কন্যাকে যত সম্পদই প্রদান করা হোক, তা উপহাররূপে গণ্য। যাকে আত্মীয়তার হক বলা যেতে পারে। মিরাসের হিস্যার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এ কারণে কোনো ভাবেই মিরাসের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। তাদের মিরাসি হক আদায় না করা পর্যন্ত তাদের অধিকার কখনও শেষ হবে না। এ বিষয়ে সবার সচেতনতা জরুরি।