21 April, 2017
১৯৪৬ সালের বিবাহিত নারীর পৃথক বাসস্থান এবং ভরণপোষণ আইন অনুযায়ী নিম্নলিখিত কারণে বিবাহিতা হিন্দু নারী স্বামী হতে পৃথক থাকার অনুমতি আদালত থেকে পেতে পারেন এবং এসব অবস্থায় তিনি স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার রাখেন।
১। স্বামী যদি দুরারোগ্য কুষ্ঠ, সিফলিস ইত্যাদি সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হন এবং এই সমস্ত ব্যাধি যদি স্ত্রীর কাছ থেকে সংক্রামিত না হয়ে থাকে।
২। স্বামী যদি স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করে এবং নিষ্ঠুরতা যদি এই প্রকারের হয় যে স্বামীর ঘরে তার জীবন হারানোর আশঙ্কা থাকে।
৩। স্বামী যদি নিজের ঘরে কোনো উপপত্নী রেখে তার সঙ্গে বসবাস করতে থাকেন ।
৪। স্বামী যদি অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করেন।
৫।স্বামী যদি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই তাকে পরিত্যাগ করে।
৬।স্বামী যদি স্ত্রীর বর্তমানে পুনরায় বিয়ে করে।
এই ধরনের অন্যান্য যৌক্তিকতাপূর্ণ কারণে স্ত্রী যদি পৃথক থাকেন। উল্লেখ্য, এই যৌক্তিকতা অবশ্যই আদালতের তরফ থেকে সমর্থিত হতে হবে।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্ত্রী তার স্বামীর কাছ পৃথক থাকলে আইনত ভরণপোষণ পেতে পারেন না। যেমন।
(ক) স্ত্রী যদি অসৎ? চরিত্রের অথবা অসতী হয়ে থাকেন।
(খ) স্ত্রী যদি অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হন।
(গ) স্ত্রী যদি আইনসঙ্গত কারণ ছাড়া নিজ স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে অনিচ্ছুক হন।
পৃথক থাকার অনুমতিপ্রাপ্ত কোনো হিন্দু নারী স্বামীর মৃত্যুর পরও তার স্বামীর পরিবার থেকে পৃথক থাকতে পারবেন এবং স্বামীর মৃত্যুকালীন পৃথক সম্পত্তি বা মৃত্যুকালীন সময়ে স্বামীর সহ-অংশীদারী সম্পত্তি থেকে একজন বিধবা হিসেবে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন। এমনকি বিধবা নারী স্বামীর জীবদ্দশায় যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই স্বামীর কাছ থেকে পৃথক থাকা সত্ত্বেও স্বামীর মৃত্যুর পর তার স্বামীর সম্পত্তি থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হয়ে থাকেন। সুতরাং একজন বিধবা তার স্বামীর পরিবারে বাস করতে বাধ্য নয় এবং অন্যত্র বসবাসের কারণে সে তার স্বামীর সম্পত্তি থেকে ভরণপোষণ লাভের অধিকার হারায় না।
তবে মনে রাখতে হবে যে, এই আইনের মধ্যদিয়ে হিন্দু নারীকে পৃথক থাকার অধিকার দেয়া হয়েছে মাত্র। এই আইনের সুযোগ নিয়ে কোনোভাবেই হিন্দু নারী অন্য কোনো পুরুষকে বিয়ে করতে পারে না। এমনকি কোনো পুরুষের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক স্থাপিত হলে সেক্ষেত্রে তার ভরণপোষণ বাতিল এবং অন্য শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।