17 August, 2018
ব্যাংক-কোম্পানী সম্পর্কিত বিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু ব্যাংক-কোম্পানী সম্পর্কিত বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল
প্রথম খন্ড প্রারম্ভিক সংক্ষিপ্ত শিরোনামা
১৷ (১) এই আইন ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ নামে অভিহিত হইবে৷
(২) ইহা ২৪শে ফেব্রুয়ারী, ১৯৯১ তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে৷
অন্যান্য আইনের প্রয়োগ
২৷ এই আইনের বিধানাবলী, উহাতে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন)] সহ আপাততঃ বলবত অন্য কোন আইনের অতিরিক্ত, এবং উহার হানিকর নয়, বলিয়া গণ্য হইবে৷
সমবায় সমিতি ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আইনের সীমিত প্রয়োগ
৩। (১) এই আইনের কোন কিছুই সমবায় সমিতি আইন, ২০০১ (২০০১ সনের ৪৭ নং আইন) অথবা সমবায় সমিতি সম্পর্কিত আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনের অধীন নিবন্ধিত কোন সমবায় সমিতি এবং মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৩২ নং আইন) এর অধীন ক্ষুদ্র্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সনদপ্রাপ্ত কোন ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, কোন সমবায় সমিতি সদস্য ব্যতীত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে অবৈধভাবে আমানত গ্রহণ করিলে ধারা ৪৪ এবং ৪৫ এর অধীন ব্যাংক-কোম্পানী যেভাবে পরিদর্শন করা হয় বা উহাকে যেভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক একইভাবে যে কোন সমবায় সমিতি পরিদর্শন করিতে, এবং ঐ সকল সমিতিকে নির্দেশ দিতে পারিবে।
(২) ধারা ১৭ এর উপ-ধারা (৬), ধারা ২৭ক এবং ধারা ২৭কক এর বিধানাবলী ব্যতীত অন্য কোন কিছুই আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নং আইন) এর অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
(৩) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বা অন্য যে কোন আইনের অধীনে নিবন্ধীকৃত হইয়া থাকুক না কেন, ধারা ৪৪ এবং ৪৫ এর অধীন ব্যাংক-কোম্পানী যেভাবে পরিদর্শন করা হয় বা উহাকে যেভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক একইভাবে ধারা ২৬ এর৩ [***] বিধান অনুসারে গঠিত কোন ব্যাংক-কোম্পানীর সাবসিডিয়ারী কোম্পানী পরিদর্শন করিতে, এবং ঐ সকল সাবসিডিয়ারী কোম্পানীকে নির্দেশ দিতে পারিবে।]
৫৷ বিষয় অথবা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে
(ক) “অনুমোদিত সম্পত্তি নিদর্শন-পত্র” অর্থ সেই সব সম্পত্তি নিদর্শন-পত্র যাহাতে কোন ট্রাষ্টী Trusts Act, 1882 (II of 1882) এর Section 20 এর clause (a), ৫[ * * *], (c) অথবা (d) এর অধীন অর্থ বিনিয়োগ করিতে পারে, এবং ধারা ৬[ ১৩(৩)] এর ব্যাপারে, সেই সব সম্পত্তি নিদর্শন-পত্র ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে যেসব সম্পত্তি নিদর্শন-পত্রকে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত ধারার ব্যাপারে অনুমোদিত সম্পত্তি নিদর্শন-পত্র হিসাবে ঘোষণা করে;
(কক) “আর্থিক প্রতিষ্ঠান” অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নম্বর আইন) এর ধারা ২ এর দফা (খ) তে সংজ্ঞায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান;]
(খ) “কোম্পানী” অর্থ এমন কোন কোম্পানী যাহা কোম্পানী আইন অনুসারে অবসায়িত হইতে পারে;
(গ) “কোম্পানী আইন” অর্থ ৮[ কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন)];
৯[ (গগ) ‘‘খেলাপী ঋণ গ্রহীতা’’ অর্থ কোন দেনাদার ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী যাহার নিজের বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রদত্ত অগ্রীম, ঋণ বা অন্য কোন আর্থিক সুবিধা বা উহার অংশ বা উহার উপর অর্জিত সুদ বা উহার মুনাফা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত সংজ্ঞা অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ৬ (ছয়) মাস অতিবাহিত হইয়াছে;
ব্যাখ্যা।- এই দফার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোন ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক না হইলে অথবা উক্ত প্রতিষ্ঠানে তাহার বা উহার শেয়ারের অংশ ২০% এর অধিক না হইলে অথবা উক্ত প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদাতা না হইলে, উক্ত প্রতিষ্ঠান তাহার বা উহার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বলিয়া গণ্য হইবে না;]
(গগগ) ‘‘ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান’’ অর্থ মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৩২ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (২১) এ সংজ্ঞায়িত কোন ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান;]
(ঘ) “চাহিবা মাত্র দায়” অর্থ এমন আর্থিক দায় যাহা চাহিবা মাত্র অবশ্যই পরিশোধ করিতে হইবে;
(ঙ) “জামানতী ঋণ বা অগ্রিম’’ অর্থ সেই ঋণ বা অগ্রিম যাহা সম্পদের জামানত গ্রহণ করিয়া প্রদান করা হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্ণীত উক্ত সম্পদের বাজার মূল্য কোন সময়েই ঋণের পরিমাণের চাইতে কম হয় না, এবং ‘‘অজামানতী ঋণ বা অগ্রিম’’ অর্থ সেই ঋণ বা অগ্রিম বা উহার ঐ অংশ যাহার বিপরীতে কোন জামানত গ্রহণ করা হয় না;]
(চ) “তফসিলি ব্যাংক” সেই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে যে অর্থে Bangladesh Bank Order (P. O. No. 127 of 1972) Article 2 (j) তে æScheduled bank” কথাটি ব্যবহৃত হইয়াছে;
(ছ) “দেনাদার” অর্থ ১৩[ ঋণ ও অগ্রিম গ্রহণ,] লাভ-ক্ষতির ভাগাভাগি, খরিদ বা ইজারার ভিত্তিতে বা অন্য কোনভাবে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তি, কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান এবং কোন জামিনদারও ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবে;]
১৪[ ***]
(ঝ) “পাওনাদার” অর্থে-
১৫[ (১) আমানত প্রদানকারী বা লাভ-ক্ষতির ] ভিত্তিতে অর্থ গচ্ছিত রাখিয়াছেন এমন ব্যক্তি, কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান, বা]
(২) লাভ-ক্ষতির ভাগাভাগি, ভাড়ায় খরিদ বা ইজারার ভিত্তিতে বা অন্য কোনভাবে আর্থিক সুযোগ সুবিধা প্রদানকারী কোম্পানী বা অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানও বুঝাইবে;
(ঞ) “প্রাইভেট কোম্পানী” সেই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে যে অর্থে উহা কোম্পানী আইনে ব্যবহৃত হইয়াছে;
(ট) “বাংলাদেশ ব্যাংক” অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (P. O. No. 127 of 1972) এর অধীন স্থাপিত Bangladesh Bank;
(ঠ) “বিধি” অর্থ এই ১৭ আইনের] অধীন প্রণীত বিধি;
(ড) “ ১৮ বিশেষায়িত ব্যাংক]” অর্থ আপাততঃ বলবত্ কোন আইনের দ্বারা বা অধীন স্থাপিত বা গঠিত কোন ব্যাংক এবং সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন ব্যাংক-কে ১৯[ বিশেষায়িত ব্যাংক] হিসাবে ঘোষণা করিলে সেই ব্যাংকও এই সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(ঢ) “ব্যবস্থাপনা পরিচালক” অর্থ-
২০ [***]
(২) ২১ বিশেষায়িত] ব্যাংকের ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যাংক যে আইন বা আইনের মর্যাদা বিশিষ্ট দলিলের অধীনে প্রতিষ্ঠিত বা গঠিত হইয়াছে উহাতে প্রদত্ত সংজ্ঞাভুক্ত কোন Managing Director;
(৩) অন্য কোন ব্যাংক কোম্পানীর ক্ষেত্রে সেই পরিচালক, যাঁহার উপর, উক্ত ব্যাংক কোম্পানীর কোন চুক্তি বা উহার সাধারণ বা পরিচালনা পর্ষদের সভায় গৃহীত প্রস্তাব, বা উহার সংঘ-স্মারকের বিধান অনুসারে, উহার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অর্পণ করা হইয়াছে, এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে, উক্ত পদের নাম যাহাই হউক না কেন, অধিষ্ঠিত কোন পরিচালকও এই সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হইবেন;
২২ (ণ) ‘‘ব্যাংক-কোম্পানী’’ অর্থ ধারা ৩১ এর অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত বাংলাদেশে ব্যাংক ব্যবসা পরিচালনাকারী কোন কোম্পানী, এবং যে কোন বিশেষায়িত ব্যাংকও উহার অন্তর্ভূক্ত হইবে;]
(ত) “ব্যাংক ব্যবসা” অর্থ কর্জ প্রদান বা বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে জনসাধারণের নিকট হইতে টাকার এইরূপ আমানত গ্রহণ করা, যাহা চাহিবামাত্র বা অন্য কোনভাবে পরিশোধযোগ্য এবং চেক, ড্রাফ্ট, আদেশ বা অন্য কোন পদ্ধতিতে প্রত্যাহারযোগ্য;
(থ) “মেয়াদী দায়” অর্থ চাহিবামাত্র দায় ব্যতীত অন্যান্য আর্থিক দায়;
(থথ) “মুদারাবা সার্টিফিকেট” অর্থ মুদারাবার ভিত্তিতে প্রদত্ত সার্টিফিকেট;
(থথথ) “মুদারাবা” অর্থ এমন চুক্তি যাহার শর্তানুসারে ইসলামী ২৪ শরীয়াহ] মোতাবেক পরিচালিত কোন ব্যাংক কোন কিছুতে মূলধন যোগান দেয় এবং গ্রাহক উহাতে দক্ষতা, প্রচেষ্টা, শ্রম ও প্রজ্ঞা নিয়োজিত করে;
(থথথথ) “মুশারিকা সার্টিফিকেট” অর্থ মুশারিকার ভিত্তিতে প্রদত্ত সার্টিফিকেট;
(থথথথথ) “মুশারিকা” অর্থ এমন চুক্তি যাহার অধীন কোন কাজে মূলধনের এক অংশ ইসলামী ২৫[ শরীয়াহ] মোতাবেক পরিচালিত কোন ব্যাংক এবং অপর অংশ গ্রাহক যোগান দেয় এবং যে কাজের লাভ চুক্তিতে উল্লিখিত অনুপাতে এবং লোকসান মূলধন অনুপাতে বণ্টিত হয়;]
(দ) “স্বর্ণ” অর্থ মুদ্রার আকারে স্বর্ণ, আইনানুগ টেন্ডার হউক বা না হউক, অথবা বাট বা পিণ্ড আকারে স্বর্ণ, পরিশোধিত হউক বা না হউক;
(ধ) “রেজিষ্ট্রার” সেই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে যে অর্থে উহা কোম্পানী আইনে ব্যবহৃত হইয়াছে৷
সংঘ স্মারক ইত্যাদির উপর আইনের প্রাধান্য
৬৷ এই আইনে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে,
(ক) ২৬[ বিশেষায়িত] ব্যাংক ব্যতীত, কোন ব্যাংক-কোম্পানীর মেমোরেন্ডাম ও আর্টিকেলস্, উহার সম্পাদিত কোন চুক্তি, বা উহার সাধারণ সভায় বা পরিচালনা পর্ষদের সভায় গৃহীত কোন প্রস্তাবে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এবং উহা এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে বা পরে, ক্ষেত্রমত, রেজিষ্ট্রিকৃত বা সম্পাদিত বা গৃহীত হউক বা হইয়া থাকুক না কেন এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর হইবে, এবং
(খ) উক্ত মেমোরেন্ডাম, আর্টিকেলস্, চুক্তি বা প্রস্তাবের কোন বিধানের যতটুকু এই আইনের সহিত অসামঞ্জস্য থাকিবে উক্ত বিধানের ততটুকু অবৈধ হইবে৷