১।কেউ কাউকে হত্যা করলে হত্যাকারী তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না।
২।ধর্ম ত্যাগকারী স্বাভাবিক নিয়মে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। কিন্তু স্বধর্ম ত্যাগ না করে ভিন্ন ধর্মের কাউকে বিয়ে করলে উত্তরাধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা যাবে না।
৩।সৎ বাবা বা সৎ মা, সৎ ছেলে-মেয়ের সম্পত্তি পায় না।
৪।সলিম সন্তানও তার বিধর্মী পিতা-মাতার উত্তরাধিকার পাবে না।
৫।স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে কেউ কারও সম্পত্তি পাবে না।
৬।জারজ সন্তান পিতার উত্তরাধিকারী হয় না, কিন্তু তার মা ও মায়ের আত্মীয়দের থেকে সম্পত্তি সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী পাবে (মুসলিম হানাফী আইন অনুসারে)
৭।শরিয়া আইনে শারীরিক কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে কাউকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ নেই। তবে মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যেহেতু তার সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো করার সক্ষমতা রাখে না, তাই তার সম্পত্তি তার কল্যাণে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে একজন অভিভাবক নিযুক্ত করতে হবে। সালিশ কিংবা আদালতের মধ্য দিয়ে এই অভিভাবক নিযুক্ত করা যায়।
৮।ইসলামী আইনে দত্তক সন্তান উত্তরাধিকার পাবে না। সম্পদের উত্তরাধিকার প্রয়োজন হয় মূলত ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য। যে কেউ তার অধীনে থাকা পোষ্য বা পালিত সন্তানের নিরাপত্তায় জীবিতাবস্থায় সম্পদ দান করতে পারেন; এমনকি সব সম্পদও। ধর্ম বা আইন এতে বাধা দেয় না।
মুসলিম আইনে সন্তানের উত্তরাধিকার জন্মসূত্রেই সুস্পষ্ট, যা কোনোভাবেই খর্ব করা যায় না। ত্যাজ্যপুত্র একটি ভ্রান্ত ধারণা, যা বাংলাদেশের কোনো আইনে বিধিত নেই। প্রকৃত মুসলিম আইন না জানার কারণে এমন অমূলক একটি বিষয় সমাজে প্রচলিত এবং তা নানা রকম সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। ত্যাজ্যপুত্র ধারণাটি বাংলাদেশে মুসলমানদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়ায় পিতার মৃত্যুর পর অন্য উত্তরাধিকারিরা সম্পত্তি বণ্টনের সময় অংশ দেয় না বা দিতে অনিচ্ছুক হয়। অপরদিকে প্রকৃত আইনের অজ্ঞতার কারণে সালিশকারীদের পক্ষপাতমূলক বা ভুল সিদ্ধান্ত দিতে দেখা যায়। এতে মুসলিম আইনের লঙ্ঘন ঘটে। আর তাই ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ আইনের আশ্রয় নিতে পারেন তার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
এক্ষেত্রে ১৮৯৩ সালের বাটোয়ারা আইনে কোট ফি দিয়ে দেওয়ানি আদালতে বাটোয়ারা মামলা করা যায়। এছাড়াও মৃত ব্যক্তির কোনো উত্তরাধিকার না থাকলে এবং তা তিনি জীবিতকালে কাউকে না দেওয়ার ব্যবস্থা করে গেলে সরকার তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির ওয়ারিশ হবে।